দেশের অনুদানভুক্ত ১ হাজার ৫১৯টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা রয়েছে। কিন্তু অনুদানভুক্ত এমন অনেক প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্বই নেই। অনুদানভুক্ত চার থেকে পাঁচশ স্বতন্ত্র মাদরাসার কোনো অস্তিত্ব এখন আর নেই বলে মনে করছেন মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। অনেক মাদরাসার শিক্ষকরা অনুদানের টাকাও তুলছেন না। এমন পরিস্থিতিতে অস্তিত্বহীন ইবতেদায়ি মাদরাসার অনুদান বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। একইসঙ্গে নতুন করে প্রতিষ্ঠিত কিছু মাদরাসাকে অনুদানভুক্ত করারও চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে মাদরাসাগুলোর তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। ইউএনওদের মাধ্যমে যাচাই করে মাদারাসার শিক্ষক শিক্ষার্থীদের তথ্য পাঠাতে বলা হয়েছে ডিসিদের। গতকাল বুধবার মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, অনুদানভুক্ত ১ হাজার ৫১৯টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের তথ্য চেয়েছে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। জেলা প্রশাসকদের তথ্য পাঠাতে বলা হয়েছে। তথ্য পাঠানোর আগে তা যাচাই করতে হবে ইউএনওদের। শিক্ষার্থীদের সংখ্যা, শিক্ষকরা অনুদানভুক্ত কি-না, শিক্ষকদের তথ্য, ব্যাংক হিসাব নম্বর ও মাদরাসার নাম ও ঠিকানা যাচাই করে পাঠাতে হবে অধিদপ্তরে। মাদরাসার তথ্য অন্তর্ভুক্ত করে জেলাভিত্তিক তালিকা পাঠাতে বলা হয়েছে ডিসিদের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল বুধবার বিকেলে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, আমাদের বেশ কিছু স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা আছে যেগুলোর অস্তিত্ব নেই। নানা মাধ্যমে আমরা এ ধরনের অভিযোগ পাই। অনুদানভুক্ত অনেকগুলো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষকরা অনুদানের টাকাও তুলছে না। এ সংখ্যা চার থেকে পাঁচশ। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর কি অবস্থা তা জানা প্রয়োজন। এজন্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ডিসিদের কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, অনুদানভুক্ত কিন্তু অস্তিত্বহীন ইবতেদায়ি মাদরাসার অনুদান বাতিল করা হবে। আর বেশ কিছু মাদরাসা নতুন নিবন্ধিত হয়ে পাঠদান চালাচ্ছে। আমরা অস্তিত্বহীন কিছু স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার অনুদান বাতিল করে নতুন মাদরাসা অনুদানভুক্ত করার পরিকল্পন করছি। এজন্য তথ্য চাওয়া হয়েছে। ডিসিদের কাছ থেকে তথ্য পেলে এসব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
গত ২০ মার্চ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষক শিক্ষার্থীদের তথ্য চেয়ে গত ২০ মার্চ ডিসিদের চিঠি পাঠিয়েছে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। ওই চিঠির কপি দৈনিক আমাদের বার্তার হাতে এসেছে। চিঠিতে অধিদপ্তর বলছে, প্রশাসনিক প্রয়োজনে এসব তথ্য চাওয়া হয়েছে।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হাবিবুর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রশাসনিক প্রয়োজনে সারা দেশে অনুদানভুক্ত ইবতেদায়ি মাদরাসাগুলোর বিদ্যমান অবস্থা, শিক্ষক, শিক্ষার্থীর হালনাগাদ তথ্য প্রয়োজন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বা তার মাধ্যমে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মাধ্যমে মাদরাসাগুলো সরেজমিনে পরিদর্শন করে তথ্য ৬ এপ্রিলের মধ্যে পাঠাতে বিশেষভাবে ডিসিদের অনুরোধ করেছে অধিদপ্তর।
জানা গেছে, নির্ধারিত তথ্য ছক অনুযায়ী তথ্য পাঠাতে বলা হয়েছে। উপজেলার নাম উল্লেখ করে মাদরাসার নাম, ঠিকানা, শিক্ষকের নাম ও পদবি, জন্মতারিখ ও এনআইডি নম্বর, যোগদানের তারিখ, অনুদানভুক্ত কি-না, শিক্ষকের হিসাব নম্বর ও ব্যাংকের নাম, বিদ্যমান শিক্ষার্থীর মোট সংখ্যা, ছাত্র সংখ্যা ও ছাত্রী সংখ্যা মন্তব্যসহ পাঠাতে বলা হয়েছে ডিসিদের।